ঔষধ আর জটিল অপারেশন ছাড়াই সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন



রেইকি আসলে কি:
রেইকি (REIKI) একটি জাপানী শব্দবন্ধ। ‘রেই’ ও ‘কি’ এই দুটি শব্দের সহ যোগে জাপানি শব্দযুগল রেই-কি তৈরি। ইংরেজী হরফে REI-KI. REI-শব্দের ইংরেজী অর্থ হলো ইউনিভার্সাল বা কসমিক। বাংলায় মহাজাগতিক, আধ্যাত্মিক, সর্বোচ্চশক্তি। আর KI- শব্দের অর্থ ভাইটাল লাইফ ফোর্স এনার্জি বা সঞ্জীবনী প্রাণশক্তি বা জীবনী শক্তি। সব মিলিয়ে মানে দাঁড়ায় কসমিক এনার্জি বা মহাজাগতিক প্রাণশক্তি বা আধ্যাত্মিক শক্তি। এক কথায় সর্বব্যাপী প্রাণশক্তি।
কোন প্রকার ওষুধ, যন্ত্রপাতি, প্যাথলজিকাল টেষ্ট বা অপারেশান ছাড়াই রেইকি চিকিৎসা আপনাকে সুস্থ করে তোলে। হাজার বছর আগে আমাদের উপমহাদেশে ঋকবেদ ও অথর্ববেদে যাকে প্রাণশক্তি বলা হয়েছে। রেইকি হলো সর্বব্যাপি জীব প্রাণশক্তি যার উপর জীবজড় নির্বিশেষে জন্মা অধিকার বিদ্যমান। এই সর্বব্যাপি শক্তি বা এনার্জি প্রয়োগ করার পদ্ধতি ইহলো রেইকি চিকিৎসা। একে বলা যায় প্রথাবিরুদ্ধ প্রচীনতম চিকিৎসা পদ্ধতির একটি আধুনিকতম সমাধান। যা বহুকাল আগে এ উপমহাদেশে চালু ছিল।
স্বয়ংসম্পূর্ন চিকিৎসা পদ্ধতি রেইকিকে মুসলিম দেশ সমূহে বলা হয় ‘নুর-এ-ইলাহী’ বা মহা প্রভূ আল্লাহর নূর/ জ্যোতিঃ/ আলো, কোথাও কোথাও বার্ক বা বর্ক। ভারতীয়রা একে মহাজাগতিক প্রাণশক্তি বা প্রাণ বলে থাকে। আমেরিকায় ইউনিভার্সাল লাইফফোর্স এনার্জি বাকসমিক এনার্জি, রাশিয়ায় বায়ো প্লাজমিক এনার্জি, চীনে তাইচি সংক্ষেপে চি। আর জাপানে রেইকি, আধুনিক বিজ্ঞানের শাখা কসমো লজির ভাষায় ঈশ্বরকণা বা হিগস-বোসান বলা হয়।
উন্নত বিশ্বে রেইকি একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ জাপানী বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতির নাম। যাকে এক কথায় বলাহয় স্পর্শচিকিৎসা (Touch healing) । কেবলমাত্র দু-হাতের তালুর স্পর্শেই সকল রোগ সেরে যায়- সাধারণ ঠান্ডা লাগা থেকে ক্যান্সার পর্যন্ত যে কোন রোগ। সেটা দৈহিক বা মানসিক, আত্মিক, সাধারণ বা জটিল যাই হোক না কেন। কোন রকম ওষুধ বা রক্তক্ষরণ ছাড়াই রেইকি চিকিৎসা আপনাকে সুস্থ করে তোলে। শুধুমাত্র হাতের ছোয়ায় সহজ থেকে দূরারোগ্য সকল ব্যাধির আরোগ্য সাধন করে- মানুষের, গাছ-পালার, পশু-পাখীর, জীব-জন্তুর কিম্বা জড়বস্তুর।
অদৃশ্য অনন্ত যে প্রাণশক্তি সৃষ্টির মূলে কৃয়াশীল রয়েছে, তারই সংহত বিশেষ প্রয়োগ স্পর্শের মাধ্যমে বা দূর থেকে রোগ নিরাময়ের প্রয়োজনে বিচ্ছুরিত করা হয়, তাই হল রেইকি চিকিৎসা। প্রবল মানসিক শক্তি, আত্মিক বশ ও শরীর স্থানের জ্ঞান রেইকি চর্চাকারীদের বিশেষ অবস্থানে উন্নীত করে।
শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি সব ধরনের মানসিক সমস্যা থেকে আরোগ্যের ক্ষেত্রেও রেইকি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আত্মবিশ্বাসহীনতা, দুশ্চিন্তা, ভয়, জড়তা বা সংকোচ ইত্যাদি সমস্যা থেকে আরোগ্যের ক্ষেত্রেও রেইকি সুন্দর কাজ করে। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও রেইকির ফলাফল চমকপ্রদ।
কীভাবে করা হয় রেইকি চিকিৎসা:
রেইকিতে দুই ধরনের পদ্ধতিতে চিকিৎসা করা হয়। রেইকি প্রথম ডিগ্রি কোর্স সম্পন্ন করার পর যে কেউ স্পর্শ করে অন্যকে নিরাময় করতে পারেন। রেইকি দ্বিতীয় ডিগ্রি সম্পন্ন করার পর দূরবর্তী যেকোনো স্থানের রোগীর আরোগ্য লাভের জন্য হিলিং করা যায়। এক্ষেত্রে স্পর্শ করার প্রয়োজন হয় না।
রেইকি প্রথম ডিগ্রি সম্পন্ন করার পর একজন রেইকি চ্যানেল পরিচিত যে কারো শরীরের অসুস্থ স্থানে রেইকি দিতে পারেন। এতে করে অসুস্থ ব্যক্তি শারীরিক ও মানসিকভাবে আরাম অনুভব করেন। প্রথম ডিগ্রি সম্পন্ন করার পর একজন রেইকি চ্যানেল নিজের ও অন্যের রোগ নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। নিজের পাশাপাশি পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের যেমন বাবা মা, ভাই বোন, স্ত্রী ও সন্তানের যেকোনো সমস্যার ক্ষেত্রে রেইকি ব্যবহার করে সাফল্য পেতে পারেন।
রেইকি সেকেন্ড ডিগ্রি সম্পন্ন করার পর দূরবর্তী যে কাউকে রেইকি দেওয়া যায়। নিয়মিত কয়েকদিন রেইকি দেওয়া হলে রোগী দূরবর্তী যেখানেই থাকুন না কেন তার শরীরে রেইকির শক্তিপ্রবাহের সঙ্গে সাড়া প্রদান করে। ধীরে ধীরে শারীরিকভাবে রোগযন্ত্রণা উপশম হয়।
আমাদের এখানে ব্যাকপেইন, অ্যাজমা, আথ্রাইটিস, গ্যাংগ্রিনসহ বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা নিয়ে লোকজন আসেন। আমরা শিখিয়ে দিই কিভাবে নিজের ভেতর লুকিয়ে থাকা শক্তিপ্রবাহকে সক্রিয় করে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকা যায়। নিজে ভালো থাকার পাশাপাশি অন্যকে ভালো রাখা যায়।
যে কেউ চাইলে রেইকি শিখতে পারেন ও চর্চা করতে পারেন। এজন্য বিশেষ শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন হয় না। দরকার একান্ত বিশ্বাস ও নিয়মিত অনুশীলন। এটি হচ্ছে এক ধরনের আধ্যাত্মিক চিকিৎসা পদ্ধতি।
কোনো আকস্মিক দুর্ঘটনায় রেইকি হতে পারে ফার্স্ট এইড। সাধারণ অসুখের ক্ষেত্রে দিনের রেইকি চিকিৎসা যথেষ্ট। কঠিন রোগে চিকিৎসা করতে হয় ৪১ দিন। একজন রেইকি মাস্টার নিজের শরীরে কসমিক এনার্জি এবজর্ব করেন তার শরীরের বিভিন্ন এন্ডোক্রিন গ্রন্থির মাধ্যমে। এই এনার্জি হাতের মাধ্যমে বাহিত হয় অন্যের শরীরে বা বস্তুতে। রেইকি এনার্জি আপন গতিতে চলে। হয়ত শরীরের যে সমস্যার জন্য রেইকি করা হচ্ছে, তারচে’ বড় সমস্যা ঐ শরীরে আছে। তখন কসমিক এনার্জি বড় সমস্যার স্থানেই চলে যায়। বড় সমস্যার সমাধান শেষে অন্যান্য ছোট সমস্যার সমাধান করে। এ কারণে রেইকিকে বলা হয় স্বয়ংসম্পূর্ণ চিকিৎসা পদ্ধতি।
রেইকি হলো স্লো বাট স্টেডি চিকিৎসা পদ্ধতি; এটি কোনো ম্যাজিক নয়, বরং সম্পূর্ণরূপে প্রাকৃতিক বিজ্ঞান। অন্যান্য চিকিৎসার পাশাপাশি রেইকি করলে রোগীর মানসিক ও শারীরিক কষ্ট দূর হয়। তাছাড়া এতে শরীর রেসপন্সও করে বেশি। অর্থাৎ রেইকি পরোক্ষভাবে চিকিৎসা পন্থার ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। এজন্যই বর্তমানে রেইকি মাস্টাররা হাসপাতালের আইসিইউতেও প্রবেশের অনুমতি পেয়ে থাকে। মানবদেহের এনার্জি চক্র থেকে এন্ডোক্রিন গ্ল্যান্ড পর্যন্ত যোগাযোগে যখন বিঘ্ন ঘটে, তখনই শরীরে সমস্যা দেখা দেয়। আর এই বিঘ্নতার কারণ আমাদের নেগেটিভ এটিচিউড, নেগেটিভ ফিলিংস এবং কনফিউশন এগুলোই বাধা তৈরি করে। এগুলো থেকেই খাওয়া-দাওয়া ও জীবনযাপনে নেগেটিভ এনার্জি চলে আসে, দেখা দেয় রোগ-শোক। সাধারণত রোগের লক্ষণ শরীরে থাকলেও এর মূল উৎস মনে। যেমন আর্থ্রাইটিসের কারণ মনের মধ্যে ভালোবাসা না পাওয়ার যন্ত্রণা, এজমার কারণ মনের মধ্যে বদ্ধতা ইত্যাদি। রেইকি মনের এই নেগেটিভ কারণগুলো দূর করে, ফলে রোগ সেরে যায়।
রেইকির প্রধান সূত্র হল কুচিন্তা ত্যাগ করে নিরন্তর শুভচিন্তা নিয়ে জীবন যাপন। দীর্ঘদিনের নেগেটিভ চিন্তা আমাদের শরীরে এনার্জি গ্রহণের প্রবেশপথ বন্ধ করে দেয়। নেগেটিভ চিন্তার বদলে পজিটিভ এনার্জির প্রতিনিয়ত ব্যবহারই খুলে দিতে পারে শরীরে কসমিক এনার্জি গ্রহণের সবক’টি দ্বার। রেইকি পজিটিভ এনার্জি হওয়ায় মনের ওপর এর প্রভাব অপরিসীম। এতে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে যায়। সে সবকিছু পজিটিভ দৃষ্টিতে দেখতে থাকে।
রেইকি চিকিৎসায় শেখানো হয় ১। আজকের জন্য আমি এই বিশ্বের কাছ থেকে যা পেয়েছি, তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব; ২। আজকের জন্য আমি কোনো দুঃশ্চিন্তা করব না; ৩। আজকের জন্য আমি মোটেই রাগ করব না; ৪। আজকের জন্য আমি প্রতিটি কাজ সৎভাবে করব; ৫। আজকের জন্য আমি প্রতিটি প্রাণির প্রতি ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা প্রদর্শন করব। রেইকি চিকিৎসা নিতে শারীরিক কোনো প্রস্তুতির প্রয়োজন নেই। তবে মানসিক প্রস্তুতির প্রয়োজন আছে, কারণ এতে মাইন্ড কনসেনট্রেশন করতে হয়। রেইকি মাস্টারের মাধ্যমে সোলার এনার্জি গ্রহণের আস্থা বা বিশ্বাস ও এখানে জরুরি বিষয়।
যেকোনো এডিকশন বা আসক্তি ছাড়াতে, বাচ্চাদের পড়াশোনায় মনোযোগী করতে, সম্পর্ক উন্নয়নে, ওজন কমাতে রেইকি চমৎকার ফল দেয়। রেইকি মন ও শরীরের মধ্যে সমন্বয় সাধন তথা ভারসাম্য রক্ষা করে। শরীর ও মনের ভারসাম্য থাকলে শরীরে অসুখ বাসা বাঁধতে পারে না। খাবারের ওপরও রেইকি করা যায়। এতে খাবারের পুষ্টিগুণ বাড়ে। রেইকির শক্তি খাবারের ক্ষতিকর উপাদান মুছে ফেলে। তাই রেইকি করলে খাবার হজম হয় ভালো। রেইকি চিকিৎসা গ্রহণের সময় এমন খাবার খাওয়া উচিত নয়, যা খেলে শরীরে টক্সিন জমে। যেমন চা, কফি, সিগারেট, এলকোহল প্রভৃতি। বরং কাঁচা বা সেদ্ধ সব্জি ও ফল খাওয়া উচিত। কারণ এগুলোর ‘র’ এনজাইম শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। তাছাড়া এ সময় প্রচুর জল পান করা উচিত।
কি কি রোগের চিকিৎসা হয়:
‘রেইকি’ মহাজাগতিক প্রাণ শক্তি’র প্রয়োগের ফলে শরীরের বহুরকম ব্যাধির আরোগ্যলাভ সম্ভব হয়। যে কোনও রোগের উপর নূরে ইলাহি তখা রেইকি চিকিৎসা চালিয়ে রোগীকে আরোগ্যের পথে নিয়ে আসা যায়। রেইকি শক্তির প্রয়োগ দ্বারা যে কোন অবস্থায় যে কোনও সময়ে যে কোন পরিবেশে আশ্চর্য্যজনক ফললাভ করা সম্ভব হয়। যে কোনও ব্যথা এবং আকস্মিক দুর্ঘটনাতে রেইকি শক্তি অকল্পনীয়রূপে কার্য্যকরী হতে দেখা যায়।
রেইকি মোটামুটি সমস্ত জ্ঞাত রোগাদির চিকিৎসায় সহায়ক বিধি হিসাবে খ্যাত এবং স্বীকৃত। যেমন সাধারণ জ্বর, সকল মাথাব্যাথা থেকে আরম্ভ করে লিভারের সমস্যা, কিডনীর সমস্যা, ব্লাডপ্রেসার, শ্বাস প্রশ্বাসের কষ্ট (হাঁপানী), টাইফয়েড, রিউমেটিক ও আর্থারাইটিস বেদনা, হার্টের রোগ, পেরালাইসিস, স্পন্ডিলাইটিস, কোমরের বেদনা ইত্যাদি। সন্ধি-শোথ, ধমনী কাঠিন্য, হৃদরোগ, রক্তচাপ, গোপন আঘাত, পিঠের ব্যথা, পেটের রোগ, গলার রোগ, পিত্ত পাথরি, অনিদ্রা, এলার্জি, ডায়াবেটিস বা মধুমেহ, ক্লান্তি, ব্রণ, হার্ট, স্নায়ু, লিভার, ফুসফুস, রক্তনালী, ইত্যাদির চিকিৎসায় রেইকি খুব ফলপ্রদ বিধি।
সকল জটিল ও কঠিন রোগে তথা পলিও, অর্টিজম, মৃগীরোগ, আলজেইমার, পার্কিনসন, এইডস, বাক আরষ্টতা, তোথলামি, হাঁপানি, আগুনে পুড়ে যাওয়া, স্ট্রোক, সকল ধরনের বাত-ব্যথা, মাইগ্রেণ, টিউমার, সকল প্রকার ক্যান্সার, গ্যাংগ্রিন, একশিরা, হার্নিয়া, চোখের বিভিন্ন অসুখ, নাকডাকা, মুখের দুর্গন্ধ, শ্বেতি বা ধবল, একিউট ডিজিজ, ইনফেকশন ইত্যাদি রেইকিতে ভাল হয়। রেইকি শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে। প্রাথমিক অবস্থায় ক্যান্সার নিরাময়ে রেইকি কার্যকর। জটিল ও কঠিন অবস্থায়ও ঈশ্বরের আশীর্বাদে আরোগ্য সম্ভব, তবে রোগীর ক্যান্সার জনিত কষ্ট বা উপসর্গ অচিন্তনীয়ভাবে কমে যায়। মৃত্যুর মুখোমুখি অবস্থায় রোগীর মৃত্যু আরামের সাথে হয়ে থাকে।
সারা শরীর, মন ও আত্মার সকল রোগ, পুরুষ ও নারীর ইনফার্টিলিটি বা বন্ধাত্ব, ডিম্বাশয়ের টিউমার, জ্বরায়ু ক্যান্সার, মাসিক ঋতুজনিত অসুস্থতা, শ্বেতস্রাব, নপুংসতা, সকল যৌন রোগ, সকল স্ত্রী রোগ, লোয়ারব্যাক পেইন, সিস্ট, ভার্টিগো, বিছনায় প্রস্রাব করা, নারী ও পুরুষদের সকল ব্যক্তিগত সমস্যা এবং গর্ভাবস্থায় রেইকি করা ভাল। গর্ভবতী মহিলারা রেইকি করলে গর্ভস্থ বাচ্চার স্বাস্থ্য ভাল হয়। প্রসব ব্যাথাহীন হয়, বাচ্চা জন্মগত ত্রুটি নিয়ে জন্মায় না।
মস্তিস্কের নানা প্রকার ব্যাধি, উত্তেজনা, চাপ যাকে আমরা টেনশন, হাইপারটেনশন ইত্যাদি বলে থাকি। মানসিক উত্তেজনা থেকে অনিদ্রার সৃষ্টি হয়, এসব রোগী’র রেইকি শক্তি প্রয়োগ দ্বারা আরোগ্য লাভ হয়। আত্ম বিশ্বাসের অভাব, উদ্বেগ, রাগ, বদমেজাজ, সকল মানসিক উৎপীড়নকে আয়ত্বে আনা সম্ভব হয়। সকল মানসিক সমস্যা তথা বিষন্নতা, দুশ্চিন্তা, সকল ধরণের ভয়-ভীত, টেনশন, শুচিবায়ু, অনিদ্রা, সকল ধরনের নেশা মুক্তি, সকল ব্যথা, বাক আরষ্টতা, খিঁচুনি, হিস্টিরিয়িা, ম্যানিয়া, সন্দেহ প্রবনতা, সকল মানসকি রোগ, ক্ষুধামন্দা, বদরাগ, ইরিটেবিলিটি বা খিটখিটেপনা, ডিপ্রেসান বা অবসাদ, সকল মানসকি চাপ কমাত, স্নায়ু দুর্বলতা, স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর জন্য রেইকি কার্যকর।
রেইকি শুধু রোগ-ব্যাধিই সারায় না, মানসিক শক্তি বৃদ্ধি ও মননিয়ন্ত্রণে অব্যর্থ। ছাত্রছাত্রীদের মেধা বিকাশে ও স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং পড়াশোনায় অমনযোগীতা দূর করে। মস্তিস্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি, ছাত্র-ছাত্রীদের অমনোযোগিতা দূর, ব্যক্তিত্বের বিকাশ ও আত্মউন্নয়নরে পথকে সুগম করে। ভূলে যাওয়া টেলিফোন নম্বর মনে করতে রেইকি করুন। রেইকি কেরিয়ার বিল্ডিং-এ সাহায্য করে। যে কোন রকম আসক্তি বা অ্যাডিকশন ছাড়াতে রেইকি সাহায্য করে।
রেইকি মাস্টার বা রেইকি থেরাপিষ্টগণ রোগ ভেদে চিকিৎসার সময় নির্ধারণ করেন ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে থাকেন। রেইকি চিকিৎসায় রোগ নির্ণয়ের প্রয়োজন হয়না। তবে স্কেনিং এর মাধ্যামে রোগের অবস্থান ও তীব্রতা নির্ণয় করা যায় সহজেই। রেইকি যেমন মানব দেহের উপর আরোগ্যলাভের পথ সুগম করে এবং জীবনকে মধুময় আনন্দে ভরে তোলে। রেইকি প্রযোগে জীব-জন্তুকে সবল ও নীরোগ রাখা সম্ভব হয়। শষ্য ক্ষেত্রে, ফুলের বাগানে রেইকি প্রয়োগদ্বারা বাগান বাড়ী ফলে ফুলে ভরে উঠতে পারে। মোটকথা গাছপালা, গরু-ছাগল, কুকুর-বিড়াল, হাঁস-মুরগির উপরও রেইকি করে অত্যন্ত সুফল পাওয়া যায়।
সবার সবকিছুর জন্য রেইকি:
রেইকি সকলের জন্য। নিজে নিজেকে রেইকি করা যায়। সুস্থ অবস্থাতেই রেইকি করুন অসুস্থতা এড়াবার জন্য। আর অসুস্থ ব্যক্তিরা রেইকি করুন সুস্থ থাকার জন্যে। অ্যালোপ্যাথি, হোমিওপ্যাথি, আয়ুরবেদি, ইউনানিসহ সকল ওষুধের সঙ্গে রেইকি ব্যবহার করা যায়। রেইকি অন্য চিকিৎসা পদ্ধতির সঙ্গে চলতে পারে। এতে চলমান পদ্ধতির কোন ক্ষতি হয়না, বরং ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। রেইকি করলে কেউ হঠাৎ বিপদে পড়বেন না। রেইকি মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক উন্নত করতে সাহায্য করে। গাছপালা হাঁস-মুরগির উপরও রেইকি করে ভাল ফল পাওয়া যায়। মৃতের উদ্দেশ্যেও রেইকি প্রেরণ করা যায়। রেইকি বন্ধু বাড়ায়। রেইকি দ্বারা আমাদের ইমিউন সিষ্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তথা জীবনীশক্তি বেড়ে যায়। জীবনী শক্তি বৃদ্ধির মাধ্যমে কঠিন ব্যাধির আশঙ্কা থেকে নিজেকে মুক্ত করা সম্ভব।
রেইকি চিকিৎসার ফলাফল:
যখনই রোগীর শরীর রেইকি চিকিৎসায় সাড়া দেবে, রোগীর কষ্ট লাঘব হবে, কিন্তু কারনের সন্ধান রোজই করতে হবে, তাহলেই ফল পাওয়া যাবে ও আরোগ্য সাধনের পথ সহজ হবে। সমস্ত শরীরে এই চিকিৎসার সময় ‘রেইকি চ্যানেল’ অর্থাৎ যার মাধ্যমে রোগীর দেহে এই প্রাণ শক্তি যাচ্ছে তার সিজেন হাত দ্বারা রোগীর দেহের রোগের সন্ধান পুঙ্খানুপুঙ্খ রূপে অনুসন্ধান করে। তার হাত তখন ভীষণ ভাবেই স্পর্শকাতর হয়ে উঠে। রোগীর শরীরের সামান্য পুঞ্জিত রোগের কারণও সে টের পায়- সেটা দৈহিক বা মানসিক, সাধারণ বা জটিল যাই হোক না কেন, কোনরকম ওষুধ বা রক্তক্ষরণ ছাড়াই ‘রেইকি চিকিৎসা’ দেহকে সুস্ত করে তোলে। চারদিন থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে রোগীর দেহের অভ্যন্তরে পরিবর্তণ লক্ষিত হয়। প্রতিটি আভ্যন্তরীন গ্রন্থি বা অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সঠিক ভাবে কার্য্য নির্বাহ শুরু করে, দেহ প্রাণশক্তিতে সক্রিয় হয়ে উঠে।
প্রতিটি পরিপাক বা হজমকারী উৎসেচক বা পাচকরস, জারকরস সঠিক মাত্রায় প্রবাহিত হয়ে পাচনতন্ত্রকে স্বাভাবিক করে। পীড়িত স্নায়ুকে স্বাভাবিক করে। শরীরের অভ্যন্তরের সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গ স্বাভাবিক ভাবে নিজ নিজ কার্য্য সম্পন্ন করে, বর্জ্য পদার্থ দেহের বাহিরে নিক্ষেপ করে। বহু বছরের পুঞ্জীভূত টক্সিন শরীর থেকে বের হয়ে আসে। এটা একরকম আঠালো ঘামের মতোই দেহের বাইরে নিক্ষিপ্ত হয়। মল গাঢ় রঙের দুর্ঘন্ধযুক্ত হয়। মূত্র বা প্রস্রাব গাঢ় চায়ের বর্ণ ধারণ করে। আবার কখনো মনে হয় ময়দা গোলা জল। এই অবস্থা চার থেকে ছয় দিন থাকে। আবার অনেক রোগীর ক্ষেত্রে মাত্র এক দিনের চিকিৎসাতেই সাড়া দিতে দেখা যায়।
সাধারণ মাথাব্যাথা, মাইগ্রেন বা যে কোন ধরণের বাত-ব্যাথা, আর্থাইটিস, এলার্জি, আলসার, হৃদরোগ, পুড়ে যাওয়া, পিঠের ব্যাথা, পেটের রোগ, কিডনির রোগ, পিত্তের রোগ, লিভার সমস্যা, অনিদ্রা, ইত্যাদি সকল সাধারণ ও জটিল রোগের চিকিৎসা সম্ভব। পলিও আক্রান্ত, অংগ বিকৃত রোগীদের জটিল অবস্থায়ও রেইকিতে সুফল পাওয়া যায়। রেইকি রোগের উৎপত্তিস্থলে গিয়ে সম্পূর্ণ আরোগ্য করে।
রেইকি কখন কাজ করেনা:
1. ক্লায়েন্টের প্রত্যাশা খুব বেশি হলে অর্থাৎ যদি তিনি এটা আশা করেন যে রেইকি কোনো জাদু বা চমৎকার করে ত্‌ৎক্ষণাত রোগ নিরাময় করবে।
2. ক্লায়েন্টের সন্দেহজনক মানসিকতা অর্থাৎ যদি তিনি অনুশীলনকারীর উপর নির্ভর না করেন, রেইকিকে বিশ্বাস না করেন এবং তাদের জীবন ও পরিস্থিতি সুষ্ঠু করার জন্য প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করতে না চান।
3. পর্যাপ্ত ট্রিটমেন্ট না নেওয়া বা অনুশীলন না করা: অন্য সবকিছু মত অনুশীলন কোনো কিছুকে নিখুঁত করে তোলে এবং কার্যকারিতাকে বাড়িয়ে দেয়।
4. রোগী যদি একটি নির্দিষ্ট ফলাফল চান তাহলে হতাশ হবেন। কারন রেইকিতে রোগীর সর্বাপেক্ষা ভালই হবে,যেটা হয়তো সেই সময় সবারই অজানা।

COMMENTS

The Remedy Point is Registered under G.S.T

We Have 40+ Gold Medalist Astrologers and Energy Healers. In Order to Avoid Any Conflict or Disagreement in Remedy and Prediction, Every Horoscope is Analysed by Multiple Specialist Astrologers. So, The Analysis is Very Unlikely to be Wrong. We also Provide Very Powerful Online and Offline Attunement and Healing Session. Here, You can Get 160+ Types of Reiki (Healing Energy). Study Materials are Available in Both English and Bengali. Certificate will be Issued also after Completion of Any Course. The Products We Sell, will be 100% Genuine as Per Our Knowledge… That’s All.

Name

Astrology Services,5,Blog,40,Latest Offers,2,Meditation,1,New Arrivals,4,Product,3,Reiki Services,6,Slide,11,Spiritual Items,3,Top Selling,14,XYZ Services,11,
ltr
item
The Remedy Point: ঔষধ আর জটিল অপারেশন ছাড়াই সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন
ঔষধ আর জটিল অপারেশন ছাড়াই সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEh8KdRMLP9yCGA9-c1lD2Fck7W2Idz6ihunOXQ67nAr5bhWP4gkRjwet0PW5qJeWf_0GNn2tiDYbVMPXKZIMEv63VqsT8aBslg9OCJkge-mmeBU0Z0DaXgJ58BU9rNZm2mHRw5NRN1lvL1k/s400/Reiki+picuture.jpg
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEh8KdRMLP9yCGA9-c1lD2Fck7W2Idz6ihunOXQ67nAr5bhWP4gkRjwet0PW5qJeWf_0GNn2tiDYbVMPXKZIMEv63VqsT8aBslg9OCJkge-mmeBU0Z0DaXgJ58BU9rNZm2mHRw5NRN1lvL1k/s72-c/Reiki+picuture.jpg
The Remedy Point
https://www.theremedypoint.com/2019/03/blog-post.html
https://www.theremedypoint.com/
https://www.theremedypoint.com/
https://www.theremedypoint.com/2019/03/blog-post.html
true
8004912936233512012
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts VIEW ALL Readmore Reply Cancel reply Delete By Home PAGES POSTS View All RECOMMENDED FOR YOU LABEL ARCHIVE SEARCH ALL POSTS Not found any post match with your request Back Home Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share to a social network STEP 2: Click the link on your social network Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy Table of Content