মায়া কি ?
মানুষ মায়ায় কেন পড়ে ?
মায়া হল ভগবানের একটি শক্তি । যা মানুষকে জড়জগতে আবদ্ধ করে রাখে । তার থেকে সহজে মুক্তি পাওয়া যায় না । সে মায়া সব ভুলিয়ে দেয় । মায়ার কারণে মানুষ সংসারে আবদ্ধ হয়ে পরে । আর এটা আমার , আমি এই করতে থাকে । যার কারণে সে কর্ম্মবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে পড়ে । যার কারণে তাকে বারবার জন্মগ্রহণ করতে হয় সেই কর্ম্মফল ভোগ করার জন্য । মানুষ পরিবারের জন্য শ্রম করে । নিজের সন্তান স্ত্রী মা বাবা ভাই বোন সবার জন্য । কত পরিশ্রম করে । জীবন সংসারে কঠোর সংগ্রাম করতে থাকে । মায়ার কারণে সে ভগবানকে ভুলে যায় । কি জন্য এই মনুষ্য দেহ লাভ করেছে তা বুঝতে পারে না । ভোগ , লোভ , লালসা , কামনা , বাসনা , হিংসা , অহংকার অর্থাৎ এই সমস্ত পাপ করতেই থাকে । এখন আপনি বলবেন আমি তো পরিবারের সুখের জন্য করছি যা আমার কর্ত্তব্য । কিন্তু যখন আপনি অক্ষম হবেন তখন সেই পরিবার আপনাকে দেখবে না ।
যাদের জন্য এত পরিশ্রম তারাই সময় শেষ হলে আপনাকে আর ভালবাসবে না । যখন আপনার কর্ম্মক্ষমতা কমে যাবে । তখন বুঝতে পারবেন সারা জীবন গাধার মত পরিবারের জন্য এত কিছু করলেন কিন্তু জীবনের শেষ মুর্হূতে কেউ আপনাকে দেখছে না । আপনি এই সংসারের মায়ার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে যিনি আপনাকে সৃষ্টি করেছেন , যিনি আপনার হৃদয়ে পরমাত্মা রূপে আছেন , যিনি আপনার শ্বাস প্রশ্বাস , যিনি আপনাকে সঠিক পথে নিয়ে আসে , সে পরমেশ্বর ভগবানকে আপনি ভুলে গেলেন । ডাকার সময় তো কত ছিল । কিন্তু সংসারের মোহে আপনি ডাকতে পারলেন না । পরিবারের সুখের জন্য নিজে কিছু করতে পারলেন না ।
বলা হয়েছে যে " মায়া " শব্দের উৎপত্তি হয়েছে সংস্কৃত " মা " অর্থাৎ নয় , এবং ' ইয়া ' অর্থাৎ সেটা শব্দদ্বয় থেকে ।
এই রহস্যময় জ্ঞানের মূলে আছে ব্রক্ষান্ডের পরম সত্য , যা সাধারণ মানুষের উপলদ্ধির বাইরে । সাধারণ মানুষের চিরাচরিত জ্ঞান এবং বাস্তবতা হলো সেই পরম সত্যের এক ভগ্নাশ মাত্র । অথচ এটাকেই আমরা " সম্পূর্ণ জ্ঞান " হিসাবে ভাবি । এই অসম্পূর্ণাতাকেই বোঝাতেই " মায়া ' শব্দ ব্যবহার করা হয়ে থাকে অর্থাৎ যা ঘটছে সেটা সম্পূর্ণ নয় ।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গীতায় অর্জ্জুনকে বলেছিলেন যে আমার এই মায়া অতিক্রম করা অত্যন্ত কঠিন ।
COMMENTS